Skip to main content

•••ক্ষীরগ্রামের মা যোগাদ্যা•••

পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লক এর ক্ষীরগ্রামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন মা যোগাদ্যা।বাংলার অন্যতম একটি সতীপীঠ হলো এই ক্ষীরগ্রাম। এখানে দেবী সতীর ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি পতিত হয়েছে। দেবী রূপে মহিষাসুরমর্দিনী। দেবী মূর্তি কষ্টি পাথরের তৈরী।


এখানে দেবী পাতালবাসীনি।মা যোগাদ্যার মূর্তিটি সারাবছর ক্ষীরদিঘির জলে নিমজ্জিত থাকে। বৈশাখী সংক্রান্তি সময় মায়ের আবির্ভাব দিবস বা বিশেষ পুজোর সময় মাকে জল থেকে তুলে এনে চলে পূজো।

প্রাচীন দেবী মূর্তি


ক্ষীরগ্রামের পূজিত প্রাচীন যোগাদ্যা মূর্তিটি কোনো কারনে হারিয়ে গেছিল। মোটামুটি ২০০ বছর আগে, বর্ধমান মহারাজ কীর্তিচন্দ্র নির্দেশে দাঁইহাটের নবীন ভাস্কর নতুন যোগাদ্যা মূর্তিটি তৈরি করেন। এই নবীন ভাস্করই হলেন তিনি দক্ষিণেশ্বরে কালী মন্দিরের মা ভবতারিণীর মূর্তি নির্মাণ করেছেন। পরবর্তীকালে ক্ষীরদিঘী সংস্কারের সময় পুরনো মূর্তিটি পাওয়া যায়। বর্তমানে পুরনো মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি এবং নবীন ভাস্কর এর তৈরি নবীন মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি, দুটি ভিন্ন মন্দিরে পূজিত হয়। মায়ের মন্দিরটিও বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচন্দ্রর নির্দেশে নির্মান করা হয়। মন্দিরের তোরণটিও বেশ নজরকারে ভক্তদের।

নবীন ভাস্করের তৈরি নবীন মূর্তি


দেবী যোগাদ্যা ভৈরব হলেন ক্ষীর খন্ডক।

দেবী মন্দিরের অদূরেই ভৈরব ক্ষীরখন্ডকের মন্দির অবস্হিত।

ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গলে বলা হয়েছে ,

‘ক্ষীরগ্রামে ডানি পার অঙ্গুষ্ঠ বৈভব৷ /যোগাদ্যা দেবতা ক্ষীরখণ্ডক ভৈরব৷৷ ’


মানে দেবী যোগাদ্যা ও ভৈরব ক্ষীরখণ্ডক।


পূজার নিয়ম নীতিতেও নানা প্রথা লক্ষ্য করা যায়।যেমন মা যোগাদ্যা উপাসনার একটি আশ্চর্য প্রথাও রয়েছে যা বর্তমানে অনুষ্ঠিত হয়,যা পৌষ সংক্রান্তি থেকে মাঘ সংক্রান্তি অবধি চলে। এই প্রথার নাম 'নিশিঢম্বুল'। একজন ঢাকি চোখে কাপড় বাঁধা অবস্থায় রোজ মধ্যরাতে মায়ের মন্দিরের গর্ভগৃহে বন্ধ দুয়ারের সম্মুখে ঢাকের বোল তোলেন, এবং রত্নবেদীতে অধিষ্ঠিত মা যোগাদ্যা সেই ঢাকের তালে নৃত্য করেন। কথিত আছে, মায়ের পায়ের নূপুরের শব্দ শোনা যায়। মায়ের রত্নবেদীতে মা জাগ্রত আছেন, মূল মূর্তি নিমজ্জিত থাকলেও, ভক্তদের এই বিশ্বাস থেকেই এ প্রথা প্ৰচলিত।


দেবী যোগাদ্যার পূজার নিয়ম গুলির মধ্যে আরেকটি অন্যতম নিয়ম হলো দেবীকে শাঁখা পড়ানো। এই নিয়মের কারণ হিসেবে ধরা হয় একটি জনশ্রুতিকে।


একবার এক শাঁখারী শাঁখা বিক্রির জন্য ক্ষীরগ্রামের যোগাদ্যা মন্দিরের দিকেই আসছিলেন। বর্তমান মন্দিরের পশ্চিম দিকে ধামীচদীঘি অবস্থিত। এই ধামীচদীঘির ঘাটেই এক সদবা নারী শাঁখারিকে ডেকে বলে তুমি কোথায় যাচ্ছ? শাঁখারি উত্তরে বলেন "শঙ্খ বেঁচিবার তরে যইছি ক্ষীরগ্রাম"। তখন ওই তখন ওই নারী বলেন, "ওখানে তোমার শাঁখা পড়ার কেউ নেই আগে আমায় শাঁখা পড়াও তারপর যেখানে যাবার যেও।" শাঁখারি শাঁখা পড়িয়ে টাকা চাইলে তখন ওই নারী বলেন "ওই যে দূরে মন্দির দেখছো, ওখানে আমার বাবা আছে, তাঁর কাছে গিয়ে বলো তার মেয়ে শাখা পড়েছে,কোলঙ্গায় টাকা আছে যেন তোমায় দেয়।"


শাঁখারি মন্দিরে এসে পুরোহিত মশাইকে সব বলেন। পুরোহিত শুনে অবাক। পুরোহিত বলে আমারতো কোন মেয়ে নেই,তাহলে কাকে শাঁখা পড়ালে তুমি ওই ধামীচির ঘাটে?

 

পুরোহিত মা যোগাদ্যার লীলা বুঝতে পেরে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে আসে ধামীচির ঘাটে। মাকে বলতে থাকেন "সারা জীবন তোর সেবা করলাম, তোর দেখা আমি পেলাম না। শাঁখারী কত পুণ্যবান সে তোকে শাঁখা পরিয়ে গেল, আমায় দেখা দিবি না মা?"


মা যোগাদ্যা জলের মধ্যে থেকে দু হাত তুলে তার শাঁখা পড়া হাত দেখায়।


এরূপ জনশ্রুতি থেকেই মা যোগাদ্যার শাঁখা পড়ানোর নিয়ম।



দেবী যোগাদ্যা পূজা বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য নিয়ম কানুন আছে।যেমন-নিশিঢম্বুল,মাসি-পিসির ঝাঁপি,শাঁখা পড়া,ক্ষীরদীঘি প্রদক্ষিণ প্রভৃতি।


এই দেবীকে ঘিরে রয়েছেন অনেক পৌরাণিক কাহিনী ও জনশ্রুতি।


কবি কৃত্তিবাসের লেখনি থেকে আমরা দেবী যোগাদ্যা মর্তে আগমনের পৌরাণিক কাহিনীটি জানতে পারি। যা বহুল প্রচলিত। রামায়ণের যুগে যখন রাম রাবণের যুদ্ধ চলছে তখন রাবণের পুত্র মহিরাবন, রাম ও লক্ষণকে তাঁর আরাধ্য দেবী ভদ্রকালী কাছে বলি দেওয়ার জন্য পাতালে বন্দি করেছিল। বলি দেওয়ার পূর্বে মহিরাবন রাম ও লক্ষণ কে বলেন তোমরা মা ভদ্রকালীকে ভূমিষ্ঠ হয় প্রণাম করো। তখন রামভক্ত হনুমান মাছির রুপ ধরে রামের কানে কানে শিখিয়ে দেয় যে বলুন "আমরা রাজার ছেলে প্রণাম করতে জানিনা আপনি আমাদের শিখিয়ে দিন"। এই বলে শ্রী হনুমান মা ভদ্রকালীর খড়্গের উপর মাছি রূপে গিয়ে বসেন।শ্রী রামচন্দ্রের কথা শুনেন মহিরাবন মাথা নিচু করে ভূমিষ্ঠ হয় প্রণাম করতে যায়। এই সুযোগের রামভক্ত হনুমান ভদ্রকালীর খড়্গ নিয়ে মহিরাবনকে বধ করেন। হনুমান রাম লক্ষণ এর সঙ্গে নিয়ে পাতাল থেকে বেরোতে উদ্যোগী হলে তখন মা ভদ্রকালী বলে-"তোমরা তো চলে যাচ্ছ আমাকে এখানে একা ফেলে গেলে তো হবে না। আমাকে পৃথিবীর মধ্যস্থল যেখানে,সেখানে নিয়ে চলো।" হনুমান সুরঙ্গ পথে রাম-লক্ষণকে কাঁধে ও মাথায় মা ভদ্রকালীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন এই ক্ষীরগ্রামে।


এরকম আরও অনেক কাহিনীর মধ্যেই,এই দেবী যোগাদ্যার সাথে সর্বাধিক প্রচলিত একটি জনশ্রুতি রয়েছে--

"যার ভয়ে পালাও মা তুমি সেই মা যোগাদ্যা আমি"---কথিত আছে একদা হরিদত্ত নামে এক রাজার সন্নিকট দেবীর আগমনে শুরু হয় এই পূজা ৷ সপ্তাহব্যাপী মহাধুমধামের মধ্য দিয়ে চলে ৷ কিন্তু অত্যাশ্চর্য ঘটনাটি হল পূজা হত নরবলি দিয়ে ৷ রাজা সমস্ত পরিবারের জন্য নিয়ম চালু করেন ,বলির জন্য প্রত্যেক পরিবারের একজন সদস্য প্রতি পূজায় ৷ স্বভাবতই শোকচ্ছায়া নেমে আসে প্রজাবর্গের মধ্যে ৷ নিয়মানুসারে একদিন এক ব্রাহ্মণীর পালা পড়ে, শোকগ্রস্ত ব্রাহ্মণী তার ছেলেকে নিয়ে ভোররাত্রিতে গ্রাম পরিত্যাগ করার চেষ্টা করে ৷ কিন্তু পথমঝে দেবীর দর্শন দেন এক বুড়ির বেশে।দেবী ব্রাহ্মণী কে বলেন এতো রাতে তোমরা কোথায় যাচ্ছ? ব্রাহ্মণী সব ঘটনা বর্ণনা করে বলে ওই রাক্ষসী দেবীর ভয়ে চলে যাচ্ছি নাহলে আমার ছেলেটাকেও খাবে। দেবী হেসে বলেন "যার ভয়ে পালাও মা তুমি সেই মা যোগাদ্যা আমি"।মা আশ্বাস দিয়ে বলেন যা তোর ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যা আমি কোনো মায়ের কোল খালি করে নরবলি চাই না।দেবী যোগাদ্যার আশীর্বাদে তারা গ্রামে ফিরে আসে এবং নরবলির পরিবর্তে শুরু হয় মহিষবলি ৷

এতসব পৌরাণিক কাহিনী, জনশ্রুতি, লোকোকথার মাঝেও দেবী যোগাদ্যা ক্ষীরগ্রামসহ সারা পৃথিবীর মাতৃভক্তদের কাছে সদা জাগ্রত।


জানা গিয়েছে, এই ক্ষীরগ্রামে একটা সময় বেশ কিছু চতুষ্পাঠী ছিল। মিলেছে বহু প্রাচীন পুঁথি। স্থানীয় ইতিহাস নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাদের দাবি, বেশ কয়েক জন পণ্ডিত এই গ্রামে বিদ্যাচর্চা করতেন। গবেষক যজ্ঞেশ্বর চৌধুরী জানিয়েছেন, এই জনপদে অন্তত ৪০টি যোগাদ্যা বন্দনা পুঁথি মিলেছে। তবে তার মতে, সবথেকে আগে যোগাদ্যা বন্দনা লিখেছিলেন কবি কৃত্তিবাস।


আমার পাঠকবর্গকে এখনও অবধি যে যে তথ্য দিয়ে সতীপীঠ ক্ষীরগ্রাম ও মা যোগাদ্যা সম্বন্ধে যা জানাতে পারলাম, তাতে এটুকু বোঝা যায় যে বাংলার এই অন্যতম সতীপীঠ ক্ষীরগ্রাম ও মা যোগাদ্যা পূজা বাংলার তথা ভারতের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের ধারক ও বাহক। এই কিলোগ্রাম ও মা যোগাদ্যার নানা ঘটনাবলী, পূজার রীতিনীতি ইত্যাদি প্রাচীন ইতিহাস গবেষকদের কাছে খুবই মূল্যবান।


লেখাঃ গৌরব মিশ্র ( Gourab Misra )

তথ্যঃ ১) অন্নদামঙ্গল

          ২) উইকিপিডিয়া

          ৩) পূর্ব বর্ধমান জেলার গ্রাম্য দেবী ও গ্রাম্য দেবতা-- দীনবন্ধু পাঁজা

          ৪)বর্ধমান ইতিহাস ও সংস্কৃতি - যঞ্জেশ্বর চৌধুরী

Comments

Popular posts from this blog

"বীরভূমের হাজারদুয়ারী": হেতমপুর

 আজ সকলকে শোনাবো বীরভূম জেলার দুবরাজপুরের নিকট " হেতমপুর "নামক একটি জনপদের গল্প। এখানে আজও বর্তমান ৯৯৯ টি দরজা বিশিষ্ট রাজ অট্টালিকা। যা " বীরভূমের হাজার দুয়ারী " নামেও পরিচিত।এই হেতমপুরের পূর্ব নাম ছিল রাঘবপুর, এই নামের পরিবর্তনের পিছনে একটা ইতিহাস আছে। রাজনগরের জমিদার রাঘব রায়ের নামে নামকরণ হয়েছিল স্থানটির। রাজনগর রাজাদের অনুরোধে বাংলার নবাব মুর্শিদকুলী খান এসেছিলেন, বিদ্রোহী রাঘব রায়কে নিয়ন্ত্রণ করতে। রাঘব রায় পরাজিত হয়ে পালিয়ে গেলে, হাতেম খান এই জায়গার জমিদার হয়ে ওঠেন এবং এর নামকরণ করা হয় হাতেমপুর। সময়ের সাথে সাথে এটি হয়ে উঠেছে হেতমপুর। যদিও এ ঘটনা বঙ্গে নতুন নয়।  এবার জানবো সেই রাজপরিবার ও তার ইতিহাসসমৃদ্ধ রাজবাড়ি সম্পর্কে।  হেতমপুর রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ মুরলিধর চক্রবর্তী সতেরো শতকের শেষের দিকে বাঁকুড়া জেলা থেকে বীরভূমে চলে আসেন। তিনি প্রথমে রাজনগরের মুসলিম জমিদারের অধীনে চাকরিতে যোগ দেন। তাঁর মৃত্যুর পর বড়ো ছেলে চৈতন্যচরণ মা আর ভাইকে নিয়ে হেতমপুরে এসে থাকতে শুরু করেন। তখন দারিদ্র ছিল তাঁদের নিত্যসঙ্গী। চৈতন্যচরনের বড়ো ছেলে রাধানাথ চাকরি পান...

•••গাজন উৎসব•••

" গাজন "-এটি একটি লৌকিক উৎসব। ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গে ও বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাবলম্বীদের একটি অন্যতম উৎসব হল এই 'গাজন'।এই উৎসব শিব, নীল,মনসা ও ধর্মঠাকুর বা ধর্মরাজ পূজাকেন্দ্রীক উৎসব। বাংলা " গাজন " শব্দটি " গর্জন " শব্দ থেকে বুৎপন্ন হয়েছে। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী সন্ন্যাসীরা প্রচন্ড গর্জন করে বলে এই উৎসবের এরূপ নামকরণ। এছাড়াও বাংলায় এ বিষয়ে আরো একটি মত রয়েছে, " গা " শব্দের অর্থ গ্রাম এবং " জন " শব্দের অর্থ জনসাধারণ , গ্রামীণ জনসাধারণের উৎসব হওয়ায় এই উৎসবের এরূপ নামকরণ হয়। বাংলায় যেহেতু অনেক লৌকিক দেবতার পূজাকে কেন্দ্র করে গাজন অনুষ্ঠিত হয়, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন পূজার বিভিন্ন সময়ে গাজন অনুষ্ঠিত হয়। যেমন-শিবের বা নীলের গাজন হয় চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে, আবার মনসা ও ধর্মরাজের গাজন হয় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে। এসবের মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত হলো শিবের গাজন। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহ জুড়ে সন্ন্যাসী বা ভক্তদের মাধ্যমে শিবের গাজন অনুষ্ঠিত হয়। চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক পূজার সঙ্গে এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। গাজন সাধারণত তিন দিন ধরে চলে।...

•••ফরওয়ার্ড ব্লক ও নেতাজী•••

সুভাষ চন্দ্র বসু তখন শুধুই জাতীয়তাবাদী নেতা সুভাষ বোস,তখনও তিনি নেতাজী হননি।১৯৩৯-এ কংগ্রেসের মধ্যে থেকে সুভাষ বোস ঘোষণা করেন যে, ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি দল গঠন করবেন। নতুন দল গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সকল মতাদর্শের অনুসারী সংস্কারপন্থীদের সর্বজনগ্রাহ্য ঐকমত্যের বৃহত্তম পদক্ষেপের প্রতিফলনসহ দেশের সকল সংস্কারপন্থি ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রগতিশীল শক্তিকে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করা। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সকল সংস্কারপন্থী, অর্থাৎ সমাজবাদী, সাম্যবাদী এবং কিষাণসভাপন্থিগণ তাঁর আহবানে সাড়া দেবেন।১৯৩৯ সালে ৩রা মে "ফরওয়ার্ড ব্লক" সুভাষচন্দ্র বসুর হাত ধরে ভারতীয় রাজনীতিতে অবতীর্ণ হয়। সুভাষ বসু কংগ্রেসের অভ্যন্তরে ডানপন্থী শক্তির আপোষ নীতির বিরোধী ছিলেন। এ ডানপন্থী শক্তি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশ সরকারকে বিব্রত করতে ইচ্ছুক ছিল না। যুদ্ধের অপরিহার্যতা উপলব্ধি করে তিনি সুপারিশ করেন যে, ব্রিটেনকে ছয় মাসের একটি চরমপত্র প্রদান করে কংগ্রেসের উচিৎ ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলা। যাহোক, কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ তাঁর সুপারিশ ও হুঁশিয়ারিকে প্...