Skip to main content

•••সুভাষ থেকে নেতাজী•••

শ্রী সুভাষ চন্দ্র বসু, বাংলা তথা ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী। তাঁর জনপ্রিয়তা এমন উচ্চতায় পৌঁছেছিল, যে ব্রিটিশ সরকারও তাঁকে অন্যান্য বিপ্লবীদের চেয়ে বেশী কড়াভাবে নজরে রেখেছিল।


আজ আমরা জেনে নেব এই সুভাষ বসু কি ভাবে নেতাজী হলেন,কে ডেকে ছিল সুভাষচন্দ্র বসুকে নেতাজী বলে?? তবে শুধু করা যাক....


কংগ্রেসের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।অবশ্য, এরপরই তাঁর অহিংস স্বাধীনতা আন্দোলনের আদর্শ থেকে মোহভঙ্গ হয় এবং সশস্ত্র আন্দোলন ছাড়া যে স্বাধীনতা পাওয়া সম্ভব নয়, এটা তিনি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারেন। গান্ধীজীর সঙ্গে তাঁর মতবিরোধও এই সময়ে তুঙ্গে পৌঁছায়। শেষ পর্যন্ত, তাঁকে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হয়।


শান্ত সুভাষ থেকে নেতাজী


এরপরের ইতিহাস এক অবিশ্বাস্য ঘটনাবলীর সংকলন। ব্রিটিশের কড়া নজর এড়িয়ে তিনি কলকাতা থেকে গোমো হয়ে আফগানিস্তানের এক অসম্ভব দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পালিয়ে যান জার্মানিতে। সেখানে হিটলারের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করে তাঁকে ভারতের স্বাধীনতার গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হন। হিটলার ভারতের স্বাধীনতার প্রয়োজনে অস্ত্র ও সশস্ত্র সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সুভাষ চন্দ্র-কে সাহায্য করতে সম্মত হন।


এই উদ্যোগের অংশরূপেই তৈরী হয় ‘দি ইন্ডিয়ান লিজিয়ন’ [The Indian Legion], জার্মান ভাষায়: ‘ইন্দাশে লিজিয়ন’ [Indische Legion]; এর সরকারী নাম ছিল ‘ফ্রি ইন্ডিয়ান লিজিয়ন’ [Free Indian Legion]। নাৎসি জার্মানির এই ইউনিটটি ভারতীয় সৈন্যদের নিয়ে তৈরী হয়েছিল। এছাড়াও কিছু জার্মান সরকারী অফিসার ও বেশ কিছু ভারতীয় অফিসারদের নিয়ে বার্লিনে জার্মান সরকার কর্তৃক নির্মিত হয় এক মেকানিজম, যার নাম ছিল ‘স্পেশ্যাল ব্যুরো ফর ইন্ডিয়া’ [Special Bureau for India]।


এই ইন্ডিয়ান লিজিয়নের ভারতীয় সৈন্যরাই সর্বপ্রথম সুভাষ চন্দ্র বসুকে ‘নেতাজী’ বলে সম্বোধন করেন ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে, আর পরবর্তীকালে ‘স্পেশ্যাল ব্যুরো ফর ইন্ডিয়া’-এর সদস্য অফিসাররাও তাঁকে একই নামে সম্ভাষন করতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে সমগ্র ভারত ও পৃথিবীর সমস্ত ভারতীয়দের মধ্যেই তাঁর এই উপাধিটি প্রবল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 


লেখাঃ-গৌরব মিশ্র

তথ্যঃ-

১)Indian Legion, Wikipedia

২) Subhash Chandra Bose, Wikipedia.

ছবিঃ-ইন্টারনেট

এডিটঃ-ইতিহাসে বাংলা

ইতিহাসে বাংলা ফেসবুক পেজ

https://etihasebangla.blogspot.com/?m=1


Comments

  1. অনেক অজানা তথ্য জানলাম। ধন্যবাদ পোস্ট করার জন্য।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

"বীরভূমের হাজারদুয়ারী": হেতমপুর

 আজ সকলকে শোনাবো বীরভূম জেলার দুবরাজপুরের নিকট " হেতমপুর "নামক একটি জনপদের গল্প। এখানে আজও বর্তমান ৯৯৯ টি দরজা বিশিষ্ট রাজ অট্টালিকা। যা " বীরভূমের হাজার দুয়ারী " নামেও পরিচিত।এই হেতমপুরের পূর্ব নাম ছিল রাঘবপুর, এই নামের পরিবর্তনের পিছনে একটা ইতিহাস আছে। রাজনগরের জমিদার রাঘব রায়ের নামে নামকরণ হয়েছিল স্থানটির। রাজনগর রাজাদের অনুরোধে বাংলার নবাব মুর্শিদকুলী খান এসেছিলেন, বিদ্রোহী রাঘব রায়কে নিয়ন্ত্রণ করতে। রাঘব রায় পরাজিত হয়ে পালিয়ে গেলে, হাতেম খান এই জায়গার জমিদার হয়ে ওঠেন এবং এর নামকরণ করা হয় হাতেমপুর। সময়ের সাথে সাথে এটি হয়ে উঠেছে হেতমপুর। যদিও এ ঘটনা বঙ্গে নতুন নয়।  এবার জানবো সেই রাজপরিবার ও তার ইতিহাসসমৃদ্ধ রাজবাড়ি সম্পর্কে।  হেতমপুর রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ মুরলিধর চক্রবর্তী সতেরো শতকের শেষের দিকে বাঁকুড়া জেলা থেকে বীরভূমে চলে আসেন। তিনি প্রথমে রাজনগরের মুসলিম জমিদারের অধীনে চাকরিতে যোগ দেন। তাঁর মৃত্যুর পর বড়ো ছেলে চৈতন্যচরণ মা আর ভাইকে নিয়ে হেতমপুরে এসে থাকতে শুরু করেন। তখন দারিদ্র ছিল তাঁদের নিত্যসঙ্গী। চৈতন্যচরনের বড়ো ছেলে রাধানাথ চাকরি পান...

মমতাময়ী রাণীমা:শক্তিস্বরূপিনী রাণী রাসমণি।

 " নারী " সৃষ্টির আধার,"নারী"-ই শক্তি, "নারী"-ই পরমাপ্রকৃতি।আবার এই নারী যখন একাধারে হয় দেশপ্রেমিক,আধ্যাত্মিক মনভাবাপন্না,সেই সঙ্গে হয় মমতাময়ী ও ঈশ্বরের আর্শীবাদ ধন‍্যা,তখন সেই নারী হয়ে ওঠে অনন্যা। আমার উৎসাহী পাঠকবর্গকে আজ এমনই এক বিরল প্রকৃতির নারীর জীবনবৃত্তান্ত শোনাবো।যাঁর মনে ছিল গভীর দেশপ্রেম ও দেশের মানুষের জন্য ছিল পরম মমতা এবং চোখে ছিল অদম্য সাহস। পরমাত্মার অশেষ কৃপায় ও তাঁর নিজ গুণে তিনি হয়ে উঠেছেন লোকমাতা রাণী রাসমণি। মহিয়সী এই নারী একদিকে যেমন ছিলেন একজন সমাজ সেবিকা,ঠিক তেমনই অন‍্যদিকে  তিনি ছিলেন একজন ধর্মপরায়ণা,ঈশ্বরপ্রেমী মানুষ। রাণী রাসমণি ইতিহাসে বাংলা ফেসবুক পেজ ১৭৯৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অধুনা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হালিশহরের 'কোনা' গ্রামে এক দরিদ্র কৃষিজীবী  স্বর্গীয় হরেকৃষ্ণ দাশ ও স্বর্গীয়া রামপ্রিয়া দাশির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।রামপ্রিয়া দেবী ভালোবেসে কন‍্যার নাম " রাণী ",কিন্তু পরে প্রতিবেশীদের দৌলতে তা হয়ে ওঠে " রাণী রাসমণি "। রাসমণি মাত্র ১১ বছর বয়সেই কলকাতার জানবাজারের জমিদার বাবু প্রিতরাম দাসের সুযোগ্য প...

•••ক্ষীরগ্রামের মা যোগাদ্যা•••

পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লক এর ক্ষীরগ্রামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন মা যোগাদ্যা।বাংলার অন্যতম একটি সতীপীঠ হলো এই ক্ষীরগ্রাম। এখানে দেবী সতীর ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি পতিত হয়েছে। দেবী রূপে মহিষাসুরমর্দিনী। দেবী মূর্তি কষ্টি পাথরের তৈরী। এখানে দেবী পাতালবাসীনি।মা যোগাদ্যার মূর্তিটি সারাবছর ক্ষীরদিঘির জলে নিমজ্জিত থাকে। বৈশাখী সংক্রান্তি সময় মায়ের আবির্ভাব দিবস বা বিশেষ পুজোর সময় মাকে জল থেকে তুলে এনে চলে পূজো। প্রাচীন দেবী মূর্তি ক্ষীরগ্রামের পূজিত প্রাচীন যোগাদ্যা মূর্তিটি কোনো কারনে হারিয়ে গেছিল। মোটামুটি ২০০ বছর আগে, বর্ধমান মহারাজ কীর্তিচন্দ্র নির্দেশে দাঁইহাটের নবীন ভাস্কর নতুন যোগাদ্যা মূর্তিটি তৈরি করেন। এই নবীন ভাস্করই হলেন তিনি দক্ষিণেশ্বরে কালী মন্দিরের মা ভবতারিণীর মূর্তি নির্মাণ করেছেন। পরবর্তীকালে ক্ষীরদিঘী সংস্কারের সময় পুরনো মূর্তিটি পাওয়া যায়। বর্তমানে পুরনো মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি এবং নবীন ভাস্কর এর তৈরি নবীন মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি, দুটি ভিন্ন মন্দিরে পূজিত হয়। মায়ের মন্দিরটিও বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচন্দ্রর নির্দেশে নির্মান করা হয়। মন্দিরের তোরণটিও বেশ নজরক...